জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার ও গবেষক ড. মিজানুর রহমান আজাহারি বলেছেন, এদেশের আসল পরিচয় হলো ইসলাম। যারা ইসলামের কথা বলে, যারা কুরআনের কথা বলে, তারা ধর্ম ব্যবসায়ী নয়। আলেদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। আলেম বিদ্বেষী হবেন না। তাহলে দুনিয়াও শেষ, আখেরাতও শেষ। নিজেকে ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবেন না।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস মাঠে লাখো তৌহিদী জনতার উদ্দ্যেশে পবিত্র কুরআনের সুরা আজহাবের ৩৫ নম্বর আয়াতের তাফসিরকালে তিনি একথা বলেন।
ড. আজাহারি বলেন, এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ১০টি বৈশিষ্টের কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেছেন, নারী ও পুরুষ সমান। এই আয়াতের মধ্য দিয়ে নারীদের সম্মান দেখিয়েছেন। ১০টি বৈশিষ্টের মধ্যে প্রথমটি হলো মহান আল্লাহ মুসলিম নারী ও পুরুষকে পছন্দ করেন। কেউ যদি নিজেকে মুসলিম বলে দাবি করেন, তিনি কখনো একথা বলতে পারবেন না যে, তিনি সেটা মানবেন না। আল্লাহর আদেশ সবাইকেই মানতে হবে। যারা আল্লার আদেশের সাথে আত্মসমর্পণ করেন, তারাই মুসলিম। আল্লার বিধানের সামনে বিশ্বাসী মুসলমানের কোনো বিধান থাকে না। প্রথম বৈশিষ্ট হলো আমরা আল্লাহর কাছে সমর্পণ করবো।
ড. মিজানুর রহমান আজাহারি বলেন, ইসলাম ছাড়া আমরা অন্য কিছু মানি না, মানবো না। ইসলাম বিরোধী কোনো মতবাদ মানবো না। ইসলাম আছে, ইসলাম থাকবে। যারা ইসলামকে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে চায়, তারা জানে না ইসলাম ধর্ম কী। ইসলাম চারা বীজের মতো, ইসলামকে জমিনে গেড়ে দিলে শাখা-প্রশাখার মতো আসমানের দিকে উঠে যায়।
তিনি বলেন, এ পৃথিবীতে সবচেয়ে দামি হলো বিশ্বাস। বিশ্বাস ছাড়া জগত চলে না। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কিসের ওপর টিকে থাকে? বিশ্বাসের ওপর টিকে থাকে। পার্টনারশীপের ব্যবসাও টিকে থাকে বিশ্বাসের ওপর। বিশ্বাসীরা টিকে না থাকলে পৃথিবী আল্লাহ টিকিয়ে রাখতেন না। একজন বিশ্বাসী বেঁচে থাকলে আল্লাহ পৃথিবী র্ধ্বংস করবেন না। জগতটাই চলে বিশ্বাসের ওপর। বিশ্বাস আছে বলেই দেশ টিকে আছে।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বাবা তার কলিজার টুকরোকে আদর করে শূন্যে ছুড়ে মারে। তখন মেয়েটি হাসে। কারণ সে জানে, তার বাবা তাকে রক্ষা করবে। এটাই বিশ্বাস। অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখে। এটাই প্রকৃত বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ছয়টি বিষয়ে বিশ্বাস রাখাই হলো ঈমান। ঈমান ছাড়া নেক আমলের কোনো স্বীকৃতি নেই। যার হৃদয়ে ঈমান আছে, সেই সফল। সফল হয়েছেন যারা, ঈমান এনেছেন তারাই। ঈমান হলো সফলতার মাপকাঠি।
আজহারি বলেন, অনুগত বান্দাদের আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহর সামনে যখন দাঁড়াবেন (নামাজে) তখন আনুগত্যের সাথে দাঁড়াবেন। মিথ্যা হলো মহাপাপ। মোবাইল ফোনের কারণে মিথ্যা আরো বেড়েছে। আমাদের অনেকেই মিথ্যা বলেন। আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন, আমাদের দেশে মিথ্যা সাক্ষ্যে অনেকের ফাঁসিও হয়েছে। আমার নবী (স.) জীবনে একটা মিথ্যাও বলেননি। মিথ্যাবাদীদের সাপোর্ট করা যাবে না। সত্য মানুষকে পূণ্যের পথ দেখায়। মিথ্যা মানুষকে পাপের পথ দেখায়। আর পাপ মানুষকে জাহান্নামের পথ দেখায়। এক্ষেত্রে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনি কোন পথে যাবেন।
তিনি আরো বলেন, ধৈর্য্যশীল নারী ও পুরুষকে আল্লাহ পছন্দ করেন। বিপদ আসলে ধৈর্যের সাথে সবর করতে হবে। বিপদে ধৈর্য্যধারণ করতে হবে। আমাদেরকে গালি দেয় মৌলবাদী আর রাজাকার বলে। রাজাকার বলে গালি দেয়ার দিন শেষ। রাজাকার শব্দটা এখন একটা অ্যাওয়ার্ড হয়ে গেছে। পরিস্থিতি পাল্টে দিতে আল্লাহর সময় লাগে না। আমাদেরকে বলে মৌলবাদী। আমরা আসল কথা বলি। আমরা মা-মাটির কথা বলি। দেশপ্রেমের কথা বলি। জনগণ ও ইসলামের কথা বলি। আমরা দেশের সমৃদ্ধির কথা বলি। এজন্য আমাদের বলা হয় মৌলবাদী। আবার আমাদেরকে বলে ধর্ম ব্যবসায়ী। আমরা ধর্মের সত্যকথা প্রচার করি। দেশ ও জনগণের যেটা ভালো সেটাই বলি।
খুলনা গেজেট/এএজে